খোঁজ মিলছে না আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও প্রতাপশালী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এমপিদের। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে এলে আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা আত্মগোপনে চলে যান।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন। বাদ যায়নি ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনও, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছিল।
জানা গেছে, রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী ও এমপিদের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ কর্মীদের অনেকেই দলের নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারা তাদের খোঁজ পাচ্ছেন না। আরটিভির পক্ষ থেকেও অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কিন্তু দেশের বেশির ভাগের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ফোনে রিং হলেও রিসিভ হয়নি। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন।
সহিংসতার মধ্যে অনেক মন্ত্রী-এমপি দেশ ছেড়েছেন। অবশ্য বিদেশে অবস্থান করা কেউ কেউ ফিরেও এসেছিলেন। গত ১৪ জুলাই দেশের পরিস্থিতি নাজুক দেখে বিদেশ থেকে ফ্লাইটের টিকিট কেটে ঢাকা ছাড়েন অনেক প্রভাবশালী।
জানা গেছে, সোমবার পর্যন্ত শতাধিক মন্ত্রী, এমপি ও নেতা দেশ ছেড়েছেন। তারা রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও দুবাই পাড়ি জমান।
রোববার রাতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নিজ এলাকা গাজীপুরেই অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, আলোচিত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসভবন সোমবার ভাঙচুর হলেও তিনি ঠিক কোথায় ছিলেন জানা যায়নি। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বেশি সরব আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাতের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।